সোয়াইন ফ্লু একটি শ্বাসযন্ত্রের রোগ যা সোয়াইন ইন্ফ্লুএন্জা বা পৃথিবীব্যাপী ইন্ফ্লুএন্জা নামেও পরিচিত । এটি এইচ ১এন ১ ভাইরাস দ্বারা ঘটে থাকে (২০০৯ সালে চিন্হিত)। এই এইচ ১এন ১ ভাইরাস শূকরের শ্বাসনালীকে সংক্রমিত করে ও তা সেই আক্রান্ত শূকরের মাধ্যমে মানুষের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। এর ফলে নাক দিয়ে জল পড়ে, কাশি, ক্ষুধামান্দ্য ও অস্থির আচরণ দেখা দেয়।
'সোয়াইন ফ্লু' ইনফ্লুয়েঞ্জার একেবারে এক নতুন ধরণ, যা ২০০৯-২০১০ সালে পৃথিবীব্যাপী ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ে। সোয়াইন ফ্লু সহজেই পরিবর্তিত হতে পারে, ফলে অতি সহজেই এক মানুষ থেকে অন্য মানুষে ছড়িয়ে পড়ে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সরকারী খাতায় বিশ্বব্যাপী সোয়াইন ফ্লু'র অবসান ঘোষণা করলেও, এর মানে এই নয় যে সোয়াইন ফ্লু বিশ্ব থেকে পরিপূর্ণভাবে অপসৃত হয়েছে। এইচ ১ এন ১ ভাইরাস যা বিশ্বব্যাপী মহামারীর আকারে ছড়িয়ে পড়েছিল তা এখন 'ফ্লু-ভাইরাস' ও 'বিশ্বজুড়ে ঋতুকালীন রোগ' হিসেবে ঘুরে ফিরে আসে।
এই মডিউলটির বিষয়বস্তু ড.প্রদীপ খাসনোবিস, জাতীয় রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র দ্বারা ২১ শে সেপ্টেম্বর ২০১৪ অনুমোদিত হয়েছে।
সোয়াইন ফ্লু (এইচ ১ এন ১) হেল্পলাইন নম্বর :০১১-২৩৯২১৪০১
রোগীর রোগের ইতিহাস ও তাদের লক্ষণ অনুযায়ী সোয়াইন ফ্লু নির্ণীত হয়। আর টি-পি সি আর হল (রিভার্স ট্রান্সক্রিপশন পলিমার চেইন রিয়াকশন)পরীক্ষাগারে নিশ্চিতরূপে সোয়াইন ফ্লু নির্ণয়ের পরীক্ষা।
দুটো ভাইরাস-বিরোধী এজেন্ট সোয়াইন ফ্লু কমাতে ও প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। এগুলো হল জানামিভির (রেলেঞ্জা) ও অসেল্টামিভির (টামিফ্লু)। এই দুটো অবশ্য ইন্ফ্লুএন্জা এ ও বি'-র উপসর্গগুলো কমাতে ও প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
এই ওষুধগুলো ডাক্তারের নির্দেশ ছাড়া নির্বিচারে এলোমেলোভাবে ব্যবহার করা উচিত নয়, যেহেতু ভাইরাসের নিজস্ব প্রতিরোধ ক্ষমতার কারণে ওষুধের ক্ষমতা অকেজো হয়ে যায়।
ই রোগ প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকরী উপায় হল সুস্বাস্থ্যের অনুশীলন
ইন্ফ্লুএন্জার টিকাকরণ অবশ্য এক কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
প্রতিরোধের টিপস:
১. প্রায়ই হাত ধোত্তয়া ।
২. 'মুখ থেকে হাত সরানো'-র পন্থা।মুখমন্ডলের যেকোন অংশকে স্পর্শ করার আকর্ষণ থেকে নিজেকে মুক্ত করা।
৩. দিনে দুবার নুন মেশানো গরম জলে গার্গল করা। (এইচ ১এন ১ গলা বা নাসিকা গহ্বরে ২-৩ দিন পর খুব বেশী সংখ্যায় বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয় ও উপসর্গগুলো প্রকাশিত হয়)।
৪. প্রতিদিন অন্তত: একবার গরম জল দিয়ে আপনার নাসারন্ধ্র পরিষ্কার করুন। জোর করে নাক ঝাড়া ও নুন মেশানো গরম জলে ভেজানো তুলো জড়ানো কাঠি দিয়ে দুটো নাসারন্ধ্র ভালো করে পরিষ্কার করার ফলে অন্তর্গত ভাইরাসের সংখ্যা অনেক কমে যায়।
৫. আপনার সাধারণ রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা (অনাক্রম্যতা) বজায় রাখতে বেশী করে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার (আমলা ও অন্যান্য টক জাতীয় ফল) খান।
৬. যত খুশি গরম পানীয় (চা, কফি-এই ধরণের) পান করুন। এই গরম পানীয় কিছুটা গার্গলের কাজও করে। এর ফলে অতিমাত্রায় বাড়তে পারা ভাইরাসগুলো গলা থেকে পাকস্থলীতে চলে যায় ও সেখানে তারা টিকে থাকতে বা সংখ্যায় বাড়তে বা ক্ষতি করতে পারে না।
তথ্যসূত্র: : www.nhs.uk
www.vaccineindia.org