ডেঙ্গু একটি সাধারণ সংক্রমণ এবং খুব ছোঁয়াচে।এটি সাধারণ ভাষায় 'হাড় ভাঙ্গা জ্বর' নামে পরিচিত। সংক্রমিত মশার কামড় দ্বারা এই রোগটি ছড়িয়ে পড়ে। এটি ক্রান্তীয় ও উপক্রান্তীয় অঞ্চলে ব্যাপকভাবে প্রসারিত।আনুপাতিক ভাবে কম হলেও কিছু ক্ষেত্রে এই রোগটি জীবন বিপন্ন করা ডেঙ্গু হেমারেজিক ফিভার (ডি এইচ এফ ) অর্থাৎ রক্তক্ষরিত ডেঙ্গু জ্বরে পরিণত হয় এবং এর ফলে :
ডেঙ্গু বিভিন্ন প্রজাতির মশা দ্বারা বাহিত ও প্রেরিত হয়। এটি প্রধানত: 'স্ত্রী এডিস ইজিপ্টিকা মশা' দ্বারা ঘটে থাকে। হাল্কা বা নিয়ন্ত্রনযোগ্য ডেঙ্গুর চিকিৎসায় পুনরুদক পান (জল ও নুনের মিশ্রণ ) বা ইন্ট্রাভেনাস রিহাইড্রেশান প্রক্রিয়া (ধমনীর মধ্যে দিয়ে পুনরুদন) সহায়ক হয় এবং আরও তীব্র ডেঙ্গুর ক্ষেত্রে অন্য সুস্থ ব্যক্তির দেহ থেকে ধমনী অন্তর্গত তরল ও রক্ত অসুস্থ ব্যক্তির মধ্যে প্রবেশ করানো প্রয়োজন।
তথ্যসূত্র: www.aiims.edu
www.nvbdcp.gov
dengue.pitb.gov.pk
www.cdc.gov
www.who.int
www.mohfw.noic.in
ডেঙ্গুর ভাইরাসটি পরিস্ফুট হওয়ার ৩ থেকে ১৪ দিনের মধ্যে উপসর্গগুলো বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয় এবং এই সময়কালকে 'ইনকিউবেশন পিরিয়ড' বা 'পুষ্টিসাধনের সময়কাল' বলে।এই গড় ইনকিউবেশন বা পুষ্টিসাধনের সময়সীমা ৪-৭ দিন।
ডেঙ্গুর লক্ষণগুলো হল :
১. আকস্মিক জ্বরের সূত্রপাত
২. মাথা ব্যাথা (সাধারণত চোখের পিছনে)
৩. পেশী এবং গাঁটের ব্যথা
৪. ফুসকুড়ি
৫. শরীর ঠান্ডা হয়ে যাওয়া (কাঁপুনি)
৬. চামড়ায় লাল মসৃন ফুসকুড়ি
৭. মুখ লাল হয়ে যাওয়া
৮. ক্ষুধামান্দ্য
৯. গলা ব্যথা
১০. অস্বাভাবিক রক্তপাত ( যেমন, নাক দিয়ে রক্ত পড়া, দাঁতের মাড়ি থেকে রক্তপাত এবং / অথবা পেচ্ছাপে রক্ত যাওয়া )
তথ্যসূত্র: www.nhs.uk
www.nvbdcp.gov
এক ধরনের সংক্রামিত এডিস ইজিপ্টিকা নামক মশা দ্বারা ডেঙ্গু রোগটি ছড়িয়ে পড়ে। এই ধরনের মশা সাধারনত: দিনের বেলায় কামড়ায় -রাতে খুব কম। ডেঙ্গু জ্বরের ভাইরাস (ডি ই এন ভি) ' ফ্ল্যাভিভিরিড পরিবারভুক্ত ' একটি 'রইবো নিউক্লিক অ্যাসিড (আর এন এ)' ঘটিত ভাইরাস। এই ধরণের চার প্রজাতির ভাইরাস যথা ডি ই এন ভি-১, ডি ই এন ভি -২, ডি ই এন ভি -৩ এবং ডি ই এন ভি -৪ স্বতন্ত্রভাবে দেখা যায়।একটি চক্রের মধ্যে দিয়ে ডেঙ্গু ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটে। একটি স্ত্রী মশা যখন একজন ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যক্তিকে কামড়ায়, তারপর সেই মশা যখন অন্য কোনো ব্যক্তিকে কামড়ায় তখন এই রোগটি চক্রাকারে ছাড়িয়ে পড়ে।
তথ্যসূত্র: www.nhs.uk
www.who.int
এই রোগ নির্ণয়ের সম্ভাব্য উপসর্গগুলোর মূল ভিত্তি হচ্ছে খুব বেশী জ্বর এবং এই সঙ্গে নিম্নলিখিত উপসর্গগুলোর যে কোনো দুটি থাকতে পারে :
আণুবীক্ষণিক পরীক্ষা : পরীক্ষাগারে পরীক্ষার মাধ্যমে শ্বেত রক্ত কনিকার সংখ্যা কম ধারা পড়লে গোড়ার দিকের পরিবর্তন সনাক্ত করা যায় এবং তারপর বিপাকীয় অম্লাধিক্যজনিত বিকার সমন্বিত পরীক্ষার দিকে এগোনো যায়। স্বল্প অনুচক্রিকা ও শ্বেত রক্তকণিকার কারণ হল যকৃত থেকে নিসৃত উচ্চ পর্যায়ের অ্যামিনো ট্রান্সফেরাস (এ এস টি এবং এ এল টি)।
দ্রুত রোগ নির্ণয়ের পরীক্ষা : ডেঙ্গু-বিরোধী 1gG ও 1gM অ্যান্টিবডি নির্ধারণ করতে 'দ্রুত ডেঙ্গু পরীক্ষা'য় চমৎকারপদ্ধতি ব্যবহৃত হয়। স্যাম্পল বা নমূনার মধ্যে উচ্চ পর্যায়ে 1gG অ্যান্টিবডির উপস্থিতি 1gM অ্যান্টিবডি নির্ধারণ করতে বাধা দেয় না বা হস্তক্ষেপ করে না। যথেষ্ট শুদ্ধ ডেঙ্গু -প্রোটিনের মিশ্রণ নিয়ে পরীক্ষা করলে চার পর্যায়েরই ডেঙ্গুর নির্ধারণ সম্ভব।
তথ্যসূত্র: www.who.int
এই রোগে ব্যথা নিরামক 'প্যারাসিটামল' জাতীয় ওষুধ সাহায্য করতে পারে, তবে 'অ্যাসপিরিন' জাতীয ওষুধ এড়িয়ে চলা উচিত, কারণ এর ফলে খুব খারাপ ধরনের রক্তপাত ঘটতে পারে।যথাযথ বিশ্রাম নিন ও প্রচুর পরিমানে তরল পান করুন। যদি ৩ থেকে ৫ দিনের মধ্যে অবস্থার উন্নতি না ঘটে তাহলে আরো ডাক্তারি পরামর্শ নিন।
তথ্যসূত্র: www.nvbdcp.gov.in
www.who.int
একজন মানুষের মধ্যে ডেঙ্গু রোগটি সাধারণ পর্যায় থেকে জীবন বিপন্নকারী আকার ধারণ করতে পারে--যাকে 'গুরুতর বা সিভিয়ার ডেঙ্গু' বলা হয়। যদিও এর কারণ এখনো পর্যন্ত অস্পষ্ট, তবুও আগে কখনো ঘটে থাকা অতীতের ডেঙ্গু-সংক্রমণ এর কারণ হতে পারে। এটি অবশ্য সবার ক্ষেত্রে ঘটে না। গুরুতরভাবে ডেঙ্গু-আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে আকস্মিক রক্তচাপ কমে যাওয়া আরেক জটিলতার মধ্যে পড়ে, যা 'ডেঙ্গু-অভিঘাত লক্ষণ' (ডেঙ্গু শক সিন্ড্রোম ) নামে পরিচিত।এই ডেঙ্গু শক সিন্ড্রোমের উপসর্গগুলো হল:
তথ্যসূত্র: www.nhs.uk
এখানো পর্যন্ত ডেঙ্গু প্রতিরোধের কোনো টিকা নেই। এই রোগ প্রতিরোধের একমাত্র উত্তম উপায় হচ্ছে মশার কামড় এড়িয়ে চলা।
তথ্যসূত্র: www.nhs.uk